বাবা-ভাইয়ের হাতে খুন হলো প্রেমিক, ভালোবাসার জন্য মরদেহকে বিয়ে করলেন তরুণী
৫৮ মিনিট আগে সোমবার, ডিসেম্বর ১, ২০২৫
ভারতের
মহারাষ্ট্রে ঘটে গেল ভালোবাসা ও নিষ্ঠুরতার এক মর্মন্তুদ ঘটনা। বর্ণবিভাজনের দেয়াল
ভেঙে উচ্চবর্ণের মেয়ে আঁচলের সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন নিম্নবর্ণের তরুণ
সক্ষম তাঁতী (২০)। কিন্তু সেই প্রেম টিকল না সমাজের কঠোর জাত প্রথার কাছে—প্রেমের
অপরাধেই প্রাণ দিতে হলো সক্ষমকে।
স্থানীয়
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, পরিবারের অমতে প্রেম করার ‘দুঃসাহসের’
জেরে আঁচলের স্বজনদের হাতে নির্মম নির্যাতনের পর নিহত হন সক্ষম। তবে প্রেমিকের মৃত্যু
থামাতে পারেনি আঁচলকে সক্ষমের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সময় তাঁর কপালে সিঁদুর পরে মৃত প্রেমিককেই
স্বামী হিসেবে গ্রহণ করেন তিনি। একই সঙ্গে ঘোষণা দেন, ভবিষ্যতে সক্ষমের পরিবারেই পুত্রবধূ
হিসেবে থাকবেন।
এনডিটিভির
খবর অনুযায়ী, আঁচলের ভাইদের মাধ্যমে সক্ষমের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। বাড়িতে নিয়মিত ওঠা–নামার
মধ্য দিয়ে তিন বছরের সম্পর্কে রূপ নেয় তাঁদের বন্ধুত্ব। কিন্তু সম্পর্কের কথা জানতে
পেরে আঁচলের পরিবার তীব্র আপত্তি জানায়। হুমকি-ধমকি উপেক্ষা করেও দুজন বিয়ের সিদ্ধান্ত
নেন।
গত
বৃহস্পতিবার সেই সিদ্ধান্তের খবর আঁচলের বাবা ও ভাই জানতে পারেন। অভিযোগ রয়েছে, তাঁরা
পরিকল্পিতভাবে সক্ষমকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান। এরপর নির্মমভাবে নির্যাতন, মাথায় গুলি
এবং পরে ভারী পাথর দিয়ে মাথা থেঁতলে দিয়ে হত্যা করা হয় তাঁকে।
সক্ষমের
মৃত্যুসংবাদ পেয়ে আঁচল ছুটে যান তাঁর বাড়িতে। শেষকৃত্যের সময় প্রেমিকের নিথর দেহে হলুদ
মেখে নিজের কপালে সিঁদুর পরেন—অর্থাৎ মৃত্যুর মধ্য দিয়েই তিনি সম্পন্ন
করেন বিয়ের আচার।
আঁচল
বলেন, সক্ষম আর আমি আমাদের ভালোবাসা শেষ পর্যন্ত জিতেছে। আমার বাবা ও ভাইয়েরা পরাজিত
হয়েছে। সক্ষম নেই, কিন্তু আমাদের সম্পর্ক এখনও জীবিত। তিনি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের
সর্বোচ্চ শাস্তি, অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ড দাবি করেন।
এদিকে
স্থানীয় পুলিশ এ ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁদের বিরুদ্ধে হত্যা, অপহরণসহ একাধিক
ধারায় মামলা হয়েছে।