ঝড় তোলার অপেক্ষায় আইপিএলে ৩.৬ কোটিতে বিক্রি হওয়া ‘রাঁচির গেইল’

Bortoman Protidin

৪ দিন আগে মঙ্গলবার, মার্চ ২৫, ২০২৫


#

শারীরিক গঠনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিংবদন্তি ক্রিস গেইলের ধারে কাছেও নেই তিনি। তবে গেইলের ব্যাট করেন বাঁ হাতে, হাঁকাতে পারেন বড় বড় ছক্কা। তাই তো তাকে 'রাঁচির গেইল' বলা হয়।

ঝাড়খণ্ডের শহর রাঁচি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার উঠে এসেছেন কেবল হাতেগোনা কয়েকজন। যে দুয়ারটা প্রথমে খুলে দেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। সেই ধোনি এখন শুধু রাঁচির নয়, পুরো দেশেরই আইকন। তার দেখিয়ে দেওয়া পথে হাঁটছেন রাঁচির গেইল খ্যাত রবিন মিঞ্জ। ২০ বছর বয়সী এই উইকেটরক্ষক ব্যাটারকে নিয়ে আইপিএল নিলামে রীতিমত কাড়াকাড়ি লাগে গুজরাট টাইটান্স ও মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের মধ্যে। শেষ পর্যন্ত ৩ কোটি ৬০ লাখ রুপিতে তাকে দলে ভেড়ায় গুজরাট।

তাই পরশুর সেই দিনটি রবিনের বাবা ফ্রান্সিস জ্যাভিয়ের মিঞ্জের কাছে আজীবনের মনে রাখার মতো। রাঁচির বিমানবন্দরে নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে বর্তমানে কাজ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত এই সৈনিক বলেন, ‘সহকর্মী এক সিআইএসএফ সৈনিক এসে খবরটা দিল। হঠাৎ এসে দেখি আমাকে জড়িয়ে ধরে বলছে, আরে ফ্রান্সিস স্যার, আপনি তো কোটিপতি হয়ে গেলেন। ’

ঝাড়খণ্ডের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী অধ্যুষিত গুমলা জেলার গ্রাম তেলগাঁওতে মিঞ্জ পরিবারের শিকড়। ক্রিকেটের অবশ্য এই অঞ্চলের সঙ্গে খুব একটা সখ্যতা নেই। বরং বেশ কয়েকজন বিশ্বমানের হকি খেলোয়াড় উপহার দিয়েছে। খেলাধুলার প্রতি ফ্রান্সিসের ভালোবাসা ছেলেবেলা থেকে। অ্যাথলেট হওয়ার কারণেই আর্মির চাকরি পান তিনি। এরপর পুরো পরিবার নিয়ে চলে আসেন রাঁচিতে। সেখানেই রবিনের ক্রিকেটের হাতেখড়ি।

রবিনের যখন দুই বছর বয়স তখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় ধোনির। তার শৈশবের চঞ্চল ভট্টাচার্য কোচিং করিয়েছেন রবিনকেও তিনি বলেন, ‘ধোনি যখন জাতীয় দলে সুযোগ পেল, তখন রাঁচিতে কেবল একটি একাডেমি ছিল। এখন ১৫টা। আমি বাড়াবাড়ি করে বলছি না, রাঁচিতে উইকেট-কিপিং গ্লাভসের চাহিদা বেশি। আর তরুণ ক্রিকেটাররা লম্বা চুল রাখতে পছন্দ করে। ’ 

কেন এই চাহিদা সেটা নিশ্চয়ই বলার প্রয়োজন নেই। ধোনির সঙ্গে একবার দেখা হয়েছি রবিনের বাবার। তাও আইপিএলের নিলামের আগ দিয়ে। এয়ারপোর্টে সেদিন রবিন সম্পর্কে ফ্রান্সিসকে ধোনি বলেছিলেন, ‘যদি কেউ (আইপিএলে) ওকে না নেয়, তবে আমরা (চেন্নাই সুপার কিংস) নিয়ে নেব। ’

রাঁচির সনেট ক্রিকেট ক্লাবে তিন জন কোচের অধীনে অনুশীলন করেন রবিন। তাকে ব্যাটিং শেখান আসিফ হক। বাকি সবার মতো তিনিও রবিনকে রাঁচির গেইল বলে ডাকেন।

আসিফ বলেন, ‘আমরা তাকে রাঁচির গেইল বলে ডাকি। বাঁহাতি, বড় ছক্কা মারে। এমন এক নতুন যুগের ক্রিকেটার, যে কি না প্রথম বল থেকেই বোলারদের ওপর চড়াও হতে ভালোবাসে। বরাবরই সে ২০০ স্ট্রাইকরেটে ব্যাটিং করতে চায়। আমি এবং এসপি গৌতম (বিহারের সাবেক ক্রিকেটার) তার ব্যাটিং নিয়ে কাজ করি। তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি যে মাটিতে শট খেলতে হবে। তা বেশ কঠিন কাজই ছিল। কিন্তু চঞ্চলদা যেমন বলেছেন, সে (রবিন) তরুণ ধোনির কথা মনে করিয়ে দেয়। ৩ থেকে ৭ নম্বর, যে কোনো জায়গায় ব্যাট করতে পারে। ’  চঞ্চল বলেন, ‘রাঁচির ক্রিকেটাররা মানেই ধোনির পুরোনো রূপ। যার লম্বা চুল, আর বড় ছক্কা হাঁকানোই লক্ষ্য। ’

ঝাড়খণ্ড স্টেডিয়ামে ক্যাম্প চলাকালীন একবার রবিনের ব্যাটিং দেখেছিলেন ধোনি। তাকে বাহবা দেওয়ার পাশাপাশি কিছু পরামর্শও দেন আইপিএলের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক, ‘তুমি ভালো খেলো, ক্রিজে টিকে থাকার চেষ্টা করো। ছক্কা মারার পর সিঙ্গেল নেওয়ার চেষ্টা করো, উইকেট ছুড়ে দিয়ে এলে হবে না। এক ওভারে ছয় ছক্কা মারার চেষ্টা করতে যেও না। ’

রবিনকে অনেকটা ধোনির মতোই মনে করেন চঞ্চল, ‘সে অনেকটা ছোটবেলার ধোনির মতো নির্ভীক, আর সব বোলারকেই আক্রমণ করতে ভালোবাসে। ক্রিজে যতটা সময় কাটিয়েছে, তার চেয়ে বরং কতটা লম্বা ছক্কা হাঁকিয়েছে তা নিয়ে বেশি চিন্তিত সে। ’

ছেলের সুবাদে রাঁচি বিমানবন্দরে রীতিমত তারকা বনে গেছেন ফ্রান্সিস। তবে তার আশা আইপিএলে কোটিপতি হলেও ছেলের পা সবসময় মাটিতেই থাকবে। তিনি বলেন, ‘রবিন যখন আইপিএল খেলতে যাবে, তখন আমি এখানেই (বিমানবন্দরে) থাকব। আমার একটা চাকরি আছে। দুই মেয়ে লেখাপড়া করছে। আমিও চাই রবিন স্নাতক সম্পন্ন করুক। ’

আমি তাকে সততা এবং আনুগত্য শিখিয়েছি। আমি আশা করি সে স্থির থাকবে। নিজের শতভাগ দিয়ে স্বপ্নের পেছনে ছুটবে। কঠোর পরিশ্রম করবে। নাইন বিহার রেজিমেন্টে আমাদের রণহুংকার হল- কর্মই ধর্ম। আমি তাকে সেটা সব সময় মনে রাখতে বলেছি। ’

স্থানীয় ক্রিকেটে সীমিত ওভারের ৩৬ ম্যাচ খেলে ১ হাজার ৩৪৬ রান করেছেন রবিন। স্ট্রাইকরেট ১৪০ ছুঁইছুঁই। এবার আইপিএলে কতটুকু ঝড় তুলতে পারেন সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।

global fast coder
ইউটিউব সাবস্ক্রাইব করুন  

সর্বশেষ

#

প্রধান উপদেষ্টার কাছে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট হস্তান্তর

#

জানমাল রক্ষায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সেনাবাহিনীর দ্রুত ও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ

#

সরকার গণমাধ্যমের নিরপেক্ষ ও দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রত্যাশা করে : তথ্য উপদেষ্টা

#

জাতীয়ভাবে প্রথমবারের মতো বাংলাসহ সব জাতিগোষ্ঠীর নববর্ষ উদযাপনের উদ্যোগ

#

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সেনাপ্রধানের সৌজন্য সাক্ষাৎ

#

বাংলাদেশে যত টিম আছে, তার মধ্যে পুলিশ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টিম : প্রধান উপদেষ্টা

#

ড. ইউনূসকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দেবে চীনের বিশ্ববিদ্যালয়

#

লাখো রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করলেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব

#

বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারে পাশে থাকবে জাতিসংঘ : আন্তোনিও গুতেরেস

#

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করলেন জাতিসংঘ মহাসচিব

Link copied