রমজানকে ঘিরে ১০টি প্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানিতে থাকছে বাড়তি সুবিধা
১ ঘন্টা আগে বুধবার, নভেম্বর ১২, ২০২৫
আসন্ন পবিত্র রমজান মাসে বাজারে প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানটি ১১টি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্যপণ্য আমদানিতে বিলম্বে বিল পরিশোধের সুবিধা দিয়েছে।
এই পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে— চাল, গম, পেঁয়াজ, ডাল, ভোজ্য তেল, চিনি, ডিম, ছোলা, মটর, মসলা এবং খেজুর। এগুলো এখন ৯০ দিনের সাপ্লায়ার্স বা বায়ার্স ক্রেডিটে আমদানি করা যাবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সোমবার (১১ নভেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, আমদানি প্রক্রিয়া সহজ করা ও রমজানের আগে বাজারে পণ্যের সরবরাহ বজায় রাখতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নির্দেশনাটি কার্যকর থাকবে ২০২৫ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত।
মার্জিন নীতিতেও শিথিলতা
এর আগে, গত ৬ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক আমদানি এলসি খোলার ক্ষেত্রে আগের ১০০ শতাংশ নগদ মার্জিন রাখার বাধ্যবাধকতা শিথিল করে। এখন ব্যাংক ও গ্রাহকের পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতে এই হার নির্ধারিত হবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, রমজান মাসে ভোগ্যপণ্যের চাহিদা বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনা করে এসব পণ্যের আমদানি সহজ করা হচ্ছে, যাতে বাজারে সরবরাহ বজায় থাকে ও দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরও জানায়, অভ্যন্তরীণ বাজারে স্থিতিশীলতা রক্ষায় সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোকে এসব পণ্যের আমদানি ঋণপত্রে অগ্রাধিকার দিতে বলা হয়েছে।
ব্যবসায়ীদের স্বস্তি
খাত সংশ্লিষ্টদের মতে, নগদ মার্জিন কমে যাওয়ায় ব্যবসায়ীদের প্রাথমিক অর্থের চাপ কমবে। এতে আমদানি ব্যয়ও হ্রাস পাবে, যা ভোক্তা পর্যায়ে মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করবে। সাম্প্রতিক ডলার সংকটে ডাল, ভোজ্যতেল, খেজুর, ছোলা ও মসলা আমদানিতে যে বাধা ছিল, নতুন এই উদ্যোগ তা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে।
সরকারের আগাম প্রস্তুতি
এর আগে, গত ৩১ অক্টোবর সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি রমজানের প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির অনুমোদন দেয়। বৈঠকে চিনি, ছোলা ও সয়াবিন তেল আমদানির পাশাপাশি ৯০ হাজার টন ইউরিয়া সার এবং দুই কার্গো এলএনজি কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, রোজার সময় ছোলা ও সয়াবিনের চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। তাই আগেভাগেই এসব পণ্য আমদানির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যাতে বাজারে সংকট না হয়।
সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এই পণ্যগুলো আমদানি করবে। পাশাপাশি, খেজুর আমদানির বিষয়েও শিগগির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
অনুমোদিত ক্রয় প্রস্তাব
সরকারি বৈঠকে স্থানীয় দরপত্রের মাধ্যমে ৫ হাজার মেট্রিক টন চিনি প্রতি কেজি ১২০ টাকা ৯২ পয়সা দরে মোট ৬০ কোটি ৪৬ লাখ টাকায়,
১০ হাজার মেট্রিক টন ছোলা প্রতি কেজি ১০৭ টাকা ৩৯ পয়সা দরে মোট ১০১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা,
এবং ৩২ লাখ ৬০ হাজার লিটার সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৬৩ টাকা ১৫ পয়সা দরে ৫৩ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে কেনার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।
সারসংক্ষেপ
সব মিলিয়ে, রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের ঘাটতি এড়াতে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক একাধিক আর্থিক ও নীতিগত পদক্ষেপ নিয়েছে। এতে আমদানিকারকরা স্বস্তি পাবেন এবং সাধারণ ভোক্তাও বাজারে এর ইতিবাচক প্রভাব দেখতে পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।