মামলা থেকে বাঁচতে চলচ্চিত্রে আসেন ফারুক
১ দিন আগে রবিবার, অক্টোবর ১৩, ২০২৪
১৯৬৬ সালের ঐতিহাসিক ছয় দফা আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী ছিলেন সদ্য প্রয়াত অভিনেতা আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। তখন তার নামে ৩৬টি মামলায় হয়। ছাত্র রাজনীতিতে তিনি তখন বেশ সক্রিয়, সিনেমা অভিনয় নিয়ে কোনো ভাবনাই ছিল না তার।
তবে একের পর এক যখন মামলা হতে থাকল তখন তার বন্ধুরাই বলল, ‘সিনেমায় ঢুকে যাও।’ সেই ঘটনার বিবরণ দিয়ে ফারুক বিবিসি বাংলাকে বলেছিলেন, ‘আমার নামে হয়রানিমূলক ৩৬টি মামলা হয়। এগুলো থেকে বাঁচার জন্য আমার কিছু বন্ধুবান্ধব বলে, চলচ্চিত্রে ঢুকে যাও। এরপরই চলচ্চিত্রে আসি।’
ফারুকের প্রথম সিনেমা ‘জলছবি’। ছবিটি নিয়ে তিনি বলেন, ‘১৯৬৮ সালে ছবিটির শুটিং শুরু হয় কিন্তু মুক্তি পায় ১৯৭১-এ। মুক্তির তারিখ ২৫-এ মার্চ বা এর দুই কী তিন দিন আগে, ঠিক মনে নেই। ছবিতে আমার সহকর্মী ছিলেন কবরী। বলা যায়, আমার সিনেমাজীবন শুরুই হয় কবরীর সঙ্গে।’
সাক্ষাৎকারে চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পীদের পারিশ্রমিক নিয়েও আক্ষেপ করতে শোনা যায় অভিনেতাকে। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়েই তিনি জানান প্রথম সিনেমা ‘জলছবি’র পারিশ্রমিক কত ছিল। ফারুক বলেন, ‘আমাকে যথাযথ সম্মান ও সম্মানী দেওয়া হয়নি। আমাকে প্রথম ছবিতে পাঁচ শ টাকা দেওয়া হয়েছিল।’
বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে তিনি অভিনয় করেছেন ‘আবার তোরা মানুষ হ’, ‘আলোর মিছিল’, ‘সুজন সখী’, ‘লাঠিয়াল’, ‘সূর্যগ্রহণ’, ‘মাটির মায়া’, ‘নয়নমনি’, ‘সারেং বৌ’, ‘গোলাপি এখন ট্রেনে’, ‘নাগরদোলা’, ‘দিন যায় কথা থাকে’, ‘কথা দিলাম’, ‘মাটির পুতুল’, ‘সাহেব’, ‘ছোট মা’, ‘এতিম’, ‘ঘরজামাই’, ‘মিয়া ভাই’র মতো অসংখ্য সিনেমায়।
ফারুক তার অভিনয়ের জন্য ১৯বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে মনোনীত হয়েছিলেন। কিন্তু তার হাতে পুরস্কার উঠেছিল কেবলই একবার। অবশ্য ২০১৬ সালে তাকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননায় ভূষিত করা হয়। অভিনয়ের বাইরে তিনি ঢাকা ১৭ আসনের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন।