'গণ-হ/ত্যা বন্ধ হোক' দাবিতে উত্তাল লন্ডন ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে আটক ৯০
৫৯ মিনিট আগে সোমবার, নভেম্বর ২৪, ২০২৫
লন্ডন, যুক্তরাজ্য: ফিলিস্তিনপন্থী একটি সংগঠনের সমর্থনে লন্ডনে আয়োজিত এক বিক্ষোভ-সমাবেশ থেকে অন্তত ৯০ জন প্রতিবাদকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আনাদোলু এজেন্সির তথ্যানুযায়ী, তথাকথিত 'সন্ত্রাসবাদী সংগঠন' হিসেবে যুক্তরাজ্যে সম্প্রতি নিষিদ্ধ হওয়া 'প্যালেস্টাইন অ্যাকশন'-এর পক্ষ নিয়ে এই প্রতিবাদ অনুষ্ঠিত হয়।
পুলিশের বিবৃতি ও বিক্ষোভের কারণ
লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ গত ২২ নভেম্বর (শনিবার) এক বিবৃতিতে জানায়, নিষিদ্ধ ঘোষিত 'প্যালেস্টাইন অ্যাকশন'কে সমর্থন করে আয়োজিত সমাবেশ থেকে এই গ্রেপ্তারগুলো করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, বিক্ষোভ সমাপ্ত হয়েছে এবং অংশগ্রহণকারীরা এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন।
বিক্ষোভকারীরা লন্ডনের ঐতিহ্যবাহী টাভিস্টক স্কোয়ারে সমবেত হন। এই স্থানটি যুদ্ধবিরোধী স্মৃতিস্তম্ভসহ একটি শান্তিকামী উদ্যান হিসেবে পরিচিত। প্রতিবাদকারীদের হাতে ছিল ফিলিস্তিনের পতাকা এবং বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড। তাদের স্লোগান ছিল ফিলিস্তিনের পক্ষে। কিছু ব্যানারে স্পষ্ট লেখা ছিল: "আমি গণহত্যার বিরোধিতা করি, আমি প্যালেস্টাইন অ্যাকশনকে সমর্থন করি।"
ব্রিটিশ অ্যাক্টিভিস্ট গোষ্ঠী 'ডিফেন্ড আওয়ার জুরিজ' তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (এক্স-পোস্ট) জানায়, পুলিশ দ্রুত বিক্ষোভকারীদের আটক করতে শুরু করে, যদিও তারা নীরবে প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়েছিলেন। প্ল্যাকার্ডগুলোতে গণহত্যা এবং প্যালেস্টাইন অ্যাকশনের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে অবস্থান প্রকাশ করা হয়েছিল।
সংগঠনের উপর নিষেধাজ্ঞা ও লাগাতার প্রতিবাদ
যুক্তরাজ্য সরকার গত জুলাই মাসে সন্ত্রাসবাদ আইনের আওতায় 'প্যালেস্টাইন অ্যাকশন'কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এই সিদ্ধান্তের পর থেকে লন্ডনে প্রায় প্রতি শনিবারই শত শত ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারী জড়ো হচ্ছেন। কর্তৃপক্ষ এই ধরনের বিক্ষোভ থেকে প্ল্যাকার্ড বহনকারী বা ফিলিস্তিনকে সমর্থন প্রদর্শনকারী অ্যাক্টিভিস্টদের ধারাবাহিকভাবে গ্রেপ্তার করে চলছে।
গাজার পরিস্থিতি: প্রেক্ষাপট
প্রসঙ্গত, গত অক্টোবর ২০২৩ থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বাহিনীর আক্রমণে গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ ও গণহত্যার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এই যুদ্ধে বেশিরভাগ নারী ও শিশুসহ প্রায় ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত এবং ১ লাখ ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। পুরো অঞ্চলটি কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
এই ভয়াবহ পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC) গত নভেম্বরে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এছাড়াও গাজার যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েল বর্তমানে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (ICJ) গণহত্যার মামলারও মুখোমুখি।