জাতীয় স্মৃতিসৌধে মানুষের উপচে পড়া ভিড়
৩ ঘন্টা আগে মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ১৬, ২০২৫
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাতে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নেমেছে। নারী-পুরুষ, শিশু থেকে বৃদ্ধ—সবার পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে পুরো স্মৃতিসৌধ এলাকা।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ শহীদদের স্মরণে জাতীয় স্মৃতিসৌধে আসতে শুরু করেন। রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার আনুষ্ঠানিক শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে স্মৃতিসৌধ এলাকা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হলে মানুষের স্রোত আরও বেড়ে যায়।
ফুল হাতে উচ্ছ্বসিত মানুষ একে একে শহীদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে শ্রদ্ধার পাশাপাশি বিজয়ের আনন্দও ছড়িয়ে পড়ে। শিশুদের উপস্থিতি ছিল বিশেষভাবে চোখে পড়ার মতো—অনেকে মুখে ও হাতে লাল-সবুজের রং এঁকেছেন, কেউবা জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে আনন্দ প্রকাশ করেন।
শীত উপেক্ষা করে যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধারাও স্মৃতিসৌধে এসে শহীদ সহযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এ সময় তাদের মাথায় ও পোশাকে লাল-সবুজের ছোঁয়া ছিল স্পষ্ট। অনেক মানুষ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে দেখা করে সালাম জানান এবং কুশল বিনিময় করেন।
এর আগে, মহান বিজয় দিবসের সূচনালগ্নে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান তারা।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর রাষ্ট্রপতি কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত একটি চৌকস দল ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় গার্ড অব অনার প্রদান করে। বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রাষ্ট্রপতি উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সেনা কর্মকর্তা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় করেন।
এদিকে, মহান বিজয় দিবস দেশব্যাপী জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদ্যাপনের অংশ হিসেবে ঢাকায় বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সর্বোচ্চ সংখ্যক জাতীয় পতাকা নিয়ে প্যারাশুটিং করে বিশ্বরেকর্ড গড়ার আয়োজন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর উদ্যোগে মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে পৃথক ফ্লাই-পাস্ট প্রদর্শন অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি আয়োজন করা হবে বিশেষ বিজয় দিবস ব্যান্ড শো।
এছাড়া ‘টিম বাংলাদেশ’-এর ৫৪ জন প্যারাট্রুপার দেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর পূর্তি উপলক্ষে সকাল ১১টা ৪০ মিনিট থেকে পতাকাবাহী স্কাইডাইভ প্রদর্শন করবেন। এই আয়োজনের মাধ্যমে বিশ্বের সর্ববৃহৎ পতাকা-প্যারাশুটিং প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে, যা একটি নতুন গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড স্থাপনের লক্ষ্য নিয়ে আয়োজন করা হয়েছে