কুমিল্লায় বেহাল অবস্থায় বীরচন্দ্র গণপাঠাগার ও নগর মিলনায়তন!

ইসতিয়াক আহমেদ:
কুমিল্লা জেলার দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে একটি হলো গনপাঠাগার ও নগর মিলনায়তন। যার নাম করণ করা হয়েছে সে সময়ের মহারাজ বীরচন্দ্র মানিক্য বাহাদুরের নামে।
১৮৮৫ সালে তৎকালীন জেলা প্রশাসক এফ এইচ স্ক্রাইন ত্রিপুরা জেলার চাকলা রোশনাবাদের জমিদার নরেশ মহারাজ বীরচন্দ্র মানিক্য বাহাদুরের কাছে পাঠাগার নির্মাণের জন্য জমি প্রদানের অনুরোধ জানান। মহারাজ কুমিল্লা শহরের প্রাণকেন্দ্র কান্দিরপাড়ে ১০ বিঘা জমির বরাদ্ধ দেন। তখন পাঠাগারের যাত্রা শুরু হয় ছনের ঘর দিয়ে।
পরবর্তী সময়ে ১৯৩৩ সালে এই ভবন ও মিলনায়নতনটি তৈরি করা হয়। মিলনায়তনের একটি অংশে পত্রিকা পড়ার ব্যবস্থা করা হয়। ২০০৩ সালে বর্তমান পাঠাগার সহ বেশ কিছু সংস্কার করা হয়। সেই সময় কুমিল্লা ক্লাব ভবনটি টিনের ঘর ছিল। এই টাউন হল ভবনের পাশে এখন দৃষ্টিনন্দন ভবন তৈরি করে ক্লাব পরিচালনা করে আসছে। এই জায়গাটিও মহারাজ বীরচন্দ্র মানিক্য বাহাদুরের।
এই ভবনটি কুমিল্লার গনপাঠাগার ও নগর মিলনায়তন, যা কুমিল্লা টাউন হল নামে পরিচিত। এই ভবনটি পরিবর্তনশীল ধারায় নতুন নির্মানের নাম ফলক ৮৭ বছরের স্মৃতিচিহ্ন ভবনের স্মারক এর তারিখ স্বাক্ষী হয়ে এখনও বহন করছে ১৯৩৩ সাল গনপাঠাগার ও নগর মিলনায়তন।
এই পাঠাগারে এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা, রাজমালা থেকে শুরু করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের কবি, সাহিত্যিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় মনীষীদের রচনাসমগ্র রয়েছে। এই পাঠাগারে রয়েছে বাংলা ভাষার ২৪ হাজার বই ও ইংরেজি ভাষার ছয় হাজার বই। এই ভবনটি শহরের শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চার অন্যতম একটি কেন্দ্র।
এ টাউন হলে পদধূলি দিয়েছেন মহাত্মা গান্ধী, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আরো অনেক মনীষি।
কিন্তু এই ঐতিহ্যবাহী গণপাঠাগার ও নগর মিলনায়তনে প্রবেশ করলে দেখা যায়, অভ্যন্তরীন অবস্থা অনেকটাই জড়জড়িত। ভবনের বিভিন্ন দিক দিয়ে দেখা দিয়েছে ছোট-বড় অনেক ফাটল, খষে পড়ছে ভবনের ছাদসহ চারপাশের দেয়ালের প্লাস্টার। বৃষ্টির সময় ভবনে ছাদ এবং দেয়ালের চারপাশ দিয়ে পানি পড়ে স্যাঁতসেঁতে হয়ে থাকে ভবনটি। যার ফলে বেহাল অবস্থায় রয়েছে গণপাঠাগার ও নগর মিলনায়তনের মঞ্চ এবং বসার স্থান গুলো। কোন দক্ষ প্রকৌশলী দ্বারা পরিক্ষা-নিরিক্ষা করলে জানা যাবে ৮৭ বছরের ঐতিহ্য গণপাঠাগার ও নগর মিলনায়তন ভবনটি কতটা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে?
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশকে স্বাধীন করে স্বপ্ন দেখেছিলেন সোনার বাংলা গড়ার। পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশের হাল ধরেছেন তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার মেধা, সততা, নিষ্ঠা, শ্রম ও যোগ্য নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মডেল হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় কুমিল্লা সদর আসনটি রুপান্তরিত হয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশের সেই ছোঁয়ায়।
কুমিল্লা শহর আধুনিক হলেও প্রাণ কেন্দ্র টাউন হলে প্রবেশ করলে দেখা যায়, এক বেহাল অবস্থা। চারপাশে আবর্জনার স্তুপ এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। কুমিল্লা শহরে ডিজিটাল বাংলাদেশের ছোঁয়া বহন করলেও, কুমিল্লা টাউন হলের দিকে তাকালে মনে হয় সেই পুরাতন কুমিল্লা নগর।
কুমিল্লা গনপাঠাগার ও নগর মিলনায়তন আধুনিক দৃষ্টিনন্দন ভবনে রূপান্তরিত করা হলে, সেখানে থাকবে একটি মিউজিয়াম, সে স্থানে থাকবে ঐতিহ্যবাহী কুমিল্লা সহ আগত বিখ্যাত মনীষিদের স্মৃতিচিহ্ন।
যাতে আরো থাকবে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযোদ্ধাদের ইতিহাস স্মৃতি ধারণ, আইসিটি হল, সেমিনার হল, প্রদর্শনী হল, সাংস্কৃতিক কক্ষ, সাংস্কৃতিক চর্চা, কবি সাহিত্যিকদের জন্য কক্ষ, বিভিন্ন বিষয়ক পাঠাগার, অতিথি শালা, অতিথি ও দর্শনার্থীরে জন্য একটি ক্যানটিন, অত্যাধুনিক গাড়ী পাকিং, নিরাপত্তার ব্যবস্থা সহ সকল প্রকার আধুনিকতার ছোঁয়া ও দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ।
আধুনিক ছোঁয়ায় নতুন প্রজন্ম মন বিকাশ, জ্ঞান আহরণ করতে পারবে বলে দাবী জানায় শিক্ষাবীদ, সু-শীল সমাজ, সাংস্কৃতিক কর্মী ও সাধারণ জনগন।
গণপাঠাগারে পর্যাপ্ত পরিমাণ বই থাকার সত্বেও, পাঠাগারে বসে বই পড়ার নেই কোনো ব্যবস্থা। আলো স্বল্পতা, প্রতিকুল পরিবেশ ও পর্যাপ্ত পরিমাণ বসার স্থান না থাকায় অনেক পাঠক পত্রিকা পড়া থেকে বঞ্জিত হচ্ছে প্রতিনিয়তই।
ভবিষৎ প্রজন্মের কাছে এই জড়াজিন্ন ভবনটি গ্রহনযোগ্য নয় বলে জানান বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমীতি কুমিল্লা শাখার সভাপতি ফয়জুন্নেসা সীমা।
সাংস্কৃতিক চর্চার জন্য একটি আধুনিক ভবন প্রয়োজন বলে জানান সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জুট কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদক শেখ জহিরুল ইসলাম।
গণপাঠাগারে পাঠকদের জন্য যে সুবিধা গুলো থাকা প্রয়োজন সেই সুবিধা গুলো নেই বলে জানান কুমিল্লার গনপাঠাগার ও নগর মিলনায়তন এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক দুলাল।
কুমিল্লা জনগনের চাহিদা অনুযায়ী এই ভবনটি নতুন করে নির্মাণ করা হলে জনগনের চাহিদা পূরণ হবে বলে জানান এডভোকেট জহিরুল ইসলাম সেলিম (পিপি)।
অবিলম্বে গনপাঠাগার ও নগর মিলনায়তনের সংস্কার চায় বলে জানান কুমিল্লা অজিত গুহ মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হাসান ইমাম মজুমদার ফটিক।
নগর মিলনায়তনে আসন স্বল্পতার কারণে অনেকে অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারে না বলে জানান কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ রুহুল আমিন ভূঁইয়া।

কুমিল্লা জেলা প্রশাসন ও ভিবিডির উদ্যোগে হেলমেট পরিধেয় মোটরসাইকেল চালকদের লাল গোলাপ শুভেচ্ছা
সিয়াম হোসেন: কুমিল্লা জেলা প্রশাসন ও ভিবিডি’র ব্যতিক্রমী উদ্যোগে হেলমেট পরিধানকারী মটরসাইকেল চালকদের ধন্যবাদ লেটার এবং লাল গোলাপের শুভেচ্ছা দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারী) বিস্তারিত →

কুমিল্লা জেলা পুলিশের অভিযানে ডাকাত চক্রের তিন সদস্য আটক
মাহফুজ আনোয়ার সৌরভ: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে চালকের ছদ্মবেশে যাত্রীদের কাছ থেকে ডাকাতির মাধ্যমে অর্থ ও মূল্যবান জিনিস ছিনিয়ে নেওয়ার একটি চক্রের ৩ জনকে ঢাকার বিস্তারিত →

দুর্নীতি দমনকে আন্দোলন হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার: সংসদে প্রধানমন্ত্রী
বর্তমান প্রতিদিন ডেস্ক: দুর্নীতি দমনকে একটি আন্দোলন হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার করার আহবান জানিয়েছেন সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, সব স্তরে দুর্নীতি বিস্তারিত →

কুমিল্লায় জাগ্রত মানবিকতার উদ্যোগে সংরাইশ সরকারী শিশু পরিবারে চাদর ও স্যুয়েটার বিতরণ
সিয়াম হোসেন: কুমিল্লায় জাগ্রত মানবিকতার উদ্যোগে নগরীর সংরাইশ সরকারী শিশু পরিবারের এতিম শিশুদের মাঝে চাদর ও স্যুয়েটার বিতরণ করা হয়েছে। বুধবার (২৭ জানুয়ারী) বিকেলে বিস্তারিত →

দেশে ৩ কোটি ৪০ লাখ মানুষ টিকা পাবে: সংসদে প্রধানমন্ত্রী
বর্তমান প্রতিদিন ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশ বা ৩ কোটি ৪০ লাখ মানুষ ৬ কোটি ৮০ লাখ বিস্তারিত →